মুআবিয়া ইবনে আবি সুফিয়ান রাযিয়াল্লাহু আনহু মক্কা বিজয়ের সময় ইসলাম প্রকাশ করলেও মূলত হিজরতের আগেই তিনি গোপনে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। এ জন্যই তিনি মুসলমানদের বিরুদ্ধে বদর, উহুদ, খন্দকসহ কোনো যুদ্ধেই অংশগ্রহণ করেননি। তিনি অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা ও যোগ্যতার অধিকারী ছিলেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে তিনি এতই নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন যে, তিনি তাকে অহী লেখার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ফকিহ সাহাবিদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
পরবর্তী সময়ে মুআবিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহু চরম সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তিনি সব ফিতনা দমন করে শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনেন। তিনিই সর্বপ্রথম যোগাযোগের জন্য ডাক বিভাগ চালু করেন এবং সরকারি দলিল-দস্তাবেজ সংরক্ষণের জন্য পৃথক বিভাগ চালু করেন। তিনি মুসলিম বাহিনীকে সুশৃঙ্খল রূপ দেন ও ইসলামের দাওয়াত বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যও বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পর্তুগাল থেকে চীন পর্যন্ত এবং আফ্রিকা থেকে ইউরোপ পর্যন্ত পয়ষট্টি লাখ বর্গমাইল বিস্তৃত অঞ্চল তার শাসনামলে ইসলামের পতাকাতলে চলে আসে। তিনি দীর্ঘ পঁচিশ বছর খেলাফতের গুরুদায়িত্ব পালন করেন।
ইসলামে এরকম অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার পরও বিকৃত ইতিহাস রচনাকারীরা তার ওপর অনেক কালিমা লেপন করার চেষ্টা করেছে। এক্ষেত্রে বর্তমান সময়ের অন্যতম সীরাত বিষেষজ্ঞ ও গবেষক ড. আলী মুহাম্মাদ সাল্লাবী ইসলামের মূল সূত্র থেকে মুআবিয়া রাযিয়অল্ল্রাহ আনহুর সঠিক ইতহাস, জীবন ও কর্ম তুলে ধরেছেন। এটি একটি নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ। সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচলিত অনেক ভুল ধারণাই এতে শুধরানো হয়েছে। আশা করি পাঠকগণ এতে দারুনভাবে উপকৃত হবেন।
লেখক পরিচিতি
ড. আলী মুহাম্মাদ সাল্লাবী ১৯৬৩ সালে লিবিয়ার বেনগাযি শহরে জন্মগ্রহণ করেন। মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উসুল আদ-দ্বীন বিভাগ এবং দাওয়া বিভাগ থেকে ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রি লাভ করেন। পরে ১৯৯৬ সালে উসুল আদ-দ্বীন বিভাগ থেকে তাফসীর, উলুমুল কুরআন বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রিপ্রাপ্ত হন। তিনি ১৯৯৯ সালে উম্মে দুরমান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সুদান থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।