হাসান ইবনে আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুর ব্যাপ্তিময় জীবন সম্পর্কে জানা প্রবীণ ও তরুণ—উভয়ের জন্যই সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি তার নানা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সান্নিধ্যেই বেড়ে ওঠেন। এছাড়া তার লালন-পালনে তার মহৎ মাতা ফাতিমাতুয যাহরা ও মহান পিতা আলী ইবনে আবি তালিব রাযিয়াল্লাহু আনহুর অবদান অনস্বীকার্য।
হাসান ইবনে আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুর জীবন ও কর্ম প্রমাণ করে, একজন মুসলিমের উচিত উম্মাহর ঐক্যকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়া। এতে সর্বকালের ও সর্বস্তরের সকল নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের জন্য রয়েছে শিক্ষার উপাদান। উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থে কখনো কখনো অনুগ্রহপূর্বক দাবি ছেড়ে দেওয়া এবং মর্যাদা ও কর্তৃত্বের পদ ত্যাগ করা অপরিহার্য।
মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহুকে খিলাফাতের আসন ছেড়ে দিয়ে হাসান রাযিয়াল্লাহু আনহু প্রমাণ করেছেন যে, মুসলিমদের মাঝে যে মতানৈক্য ছিল, তা নিতান্তই রাজনৈতিক। যদিও মুসলিমদের একে অপরের মাঝে দ্বন্দ¦-সংঘাত ছিল, তবুও তারা একে অপরকে দ্বীনী ভাইবোন হিসেবেই বিবেচনা করতেন।
হাসান রাযিয়াল্লাহু আনহুর জীবনী সকল মুসলমানের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিশেষত, মুসলিম শাসকদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ। মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার চাকচিক্য কীভাবে বিসর্জন দিতে হয় হাসান রাযিয়াল্লাহু আনহুর জীবন থেকে আমরা সেই শিক্ষাই লাভ করি। বক্ষ্যমাণ বইটিতে হাসান ইবনে আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুর জীবনী বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে; প্রকৃতপক্ষেই যিনি আমাদের যুবসমাজ ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এক উত্তম আদর্শ, ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের জন্য এক অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব।
লেখক পরিচিতি
ড. আলী মুহাম্মাদ সাল্লাবী; জন্ম ১৯৬৩ সালে, লিবিয়ার বেনগাযি শহরে। তিনি ১৯৯২/৯৩ সালে মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়াহ ও উসুল আদ-দ্বীন বিভাগ থেকে ‘ব্যাচেলরস অব আর্টস’ ডিগ্রিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন। এরপর ১৯৯৬ সালে সুদানে অবস্থিত উম্মু দুরমান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উসুল আদ-দ্বীন, তাফসীর এবং উলূমুল কুরআন বিভাগ থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি এবং ১৯৯৯ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সৌভাগ্য লাভ করেন। এছাড়াও তিনি মদীনা ও সৌদি আরবের অন্যান্য অঞ্চল এবং লিবিয়া ও ইয়েমেনের প্রথিতযথা আলেমদের সোহবতে সম্পূর্ণ কুরআন ও বিভিন্ন ইসলামী বিষয় অধ্যয়ন করেন।