একদিন পৃথিবী ধ্বংস হবে। আসমান বিদীর্ণ হবে। চন্দ্র সূর্য আলোহীন হয়ে যাবে। নক্ষত্ররাজি খসে খসে পড়তে থাকবে। পর্বতসমূহ তুলোর ন্যায় উড়তে থাকবে। সাগরসমূহ উত্তাল হয়ে যাবে। যমিন প্রকম্পিত হবে। মানুষ ভয়ে দিশেহারা হয়ে যাবে। সেদিনই কিয়ামত হবে। আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা কিয়ামত কবে হবে। তবে কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার পূর্বে ছোট বড় অনেক আলামত প্রকাশ পাবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেসব আলামত সম্পর্কে হাদিস শরিফে বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “বড় দশটি আলামত প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত হবে না।” সেগুলোর মধ্যে একটি হলো দাজ্জাল। দাজ্জাল নামটা যেমন অপ্রীতিকর তেমন তার আকৃতিও মারাত্মক ভয়ঙ্কর। সে বিশাল দেহের অধিকারী হবে। বড় কপাল বিশিষ্ট হবে এবং তাতে কাফির লেখা থাকবে। ভাঁজ বিশিষ্ট প্রশস্ত বক্ষের অধিকারী হবে। তার গায়ের রং লাল হবে। সে কানা হবে, অন্য চোখ আঙ্গুরের ন্যায় ফোলা হবে। বৃক্ষের শাখার ন্যায় কোঁকড়ানো চুল বিশিষ্ট হবে। তার তেলেসমতিও হবে ধাঁধা লাগানো। তার সাথে পানির ঝর্ণা, আগুন ও রুটির পর্বতসমূহ থাকবে। সে বিরাণভূমি দিয়ে অতিক্রমকালে বলবে, ‘তোমার ভেতরে যা কিছু আছে বের করে দাও।’ ভূমি তার গর্ভস্থিত সবকিছু বের করে দিবে। তার নির্দেশে পশুগুলো মোটাতাজা হয়ে যাবে এবং ওলানগুলো দুধে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। সে অন্ধ ও কুষ্টরোগীকে আরোগ্য দিবে এবং মৃতকে জীবিত করবে। সে বলবে, ‘আমি তোমাদের রব।’ সে খোরাসান থেকে আত্মপ্রকাশ করবে। যমিনের বুকে চল্লিশ দিন অবস্থান করবে এবং বিভিন্ন ধরণের বিপর্যয় সৃষ্টি করবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আদম আলাইহিস সালাম-এর জন্ম থেকে নিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত দাজ্জালের ফিতনার চেয়ে মারাত্মক কোন ফিতনা সংঘটিত হবে না।” ইমাম আব্দুল গণী মাকদিসি রাহিমাহুল্লাহ ‘আখবারুদ দাজ্জাল’ কিতাবটিতে দাজ্জাল সম্পর্কে বর্ণিত হাদিসগুলো সুন্দর ও সুবিন্যস্তভাবে সংকলন করেছেন। সেটারই অনূদিত রূপ ‘দাজ্জাল চিনুন নিরাপদ থাকুন’। আশা করি বইটি পড়লে দাজ্জাল সম্পর্কে সঠিক ও স্বচ্ছ ধারণা লাভ হবে।