: আল্লাহর সাথে যুদ্ধ করা যায়?
: না। অসম্ভব।
: তাহলে এ নামেই বই লিখলেন কেন?
: উত্তর বলার আগে একটি প্রশ্ন করি- আপনি এখন কী কাজ করছেন?
: একটি কম্পানিতে চাকুরি করছি।
: সেখানে সুদি লেনদেন হয়?
: কিছুটা।
: আপনি কি জানেন- আল্লাহ তাআলা এ ব্যাপার কী বলেছেন?
: না তো।
: আল্লাহ তাআলা নিজে সুদখোর, ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ষোষণা দিয়েছেন।
: মানে?
: আল্লাহ তাআলা বলছেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং লোকদের কাছে তোমাদের যে সুদ বাকি রয়ে গেছে তা ছেড়ে দাও, যদি যথার্থই ইমান এনে থাকো। আর যদি এমনটি না করো তাহলে জেনে রাখো- আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।*
: আচ্ছা। বুঝলাম। কিন্তু আমি শুনেছি বইটি গল্প কেন্দ্রিক; যেখানে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি গল্পের আদলে তাত্বিকভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। অথচ আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে পুরো বইটির আদি-অন্ত সুদ-ঘুষ নিয়েই আলোচিত। আসলেই কি তাই?
: না।
: তাহলে?
: আপনি ঠিকই শুনেছেন- সমাজে খুঁটি গেড়ে বসা নানান গর্হিত কাজ নিয়েই বইটি আলোচিত; যা মূলত আল্লাহ তাআলার নাফরমানিকে প্রমোট করে।
: আল্লাহর নাফরমানি প্রমোট করলেই আল্লাহর সাথে যুদ্ধ হয়ে যায়?
: সরাসরি যুদ্ধ হয়না। কারণ, কেউ সেটার ক্ষমতা রাখে না।
: বুঝলাম না।
: আচ্ছা, বলছি। মনে করুন, পিতা তার সন্তানকে ভালোবাসে। তাই তিনি সন্তানকে কোলেপিঠে করে মানুষ করলেন। কিন্তু সন্তান বড় হওয়ার পর পিতার অবাধ্য হলো। তার কোনো কথা মানল। প্রত্যেকটি কথায় বিরুদ্ধাচারণ করল। এখন এই বিরোধিতা কি মৌনভাবে পিতার বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামান্তর নয়?
: হুঁ, কিছুটা।
: তাহলে চিন্তা করে দেখুন, আল্লাহ তাআলা আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। আমাদেরকে সবকিছু দিয়েছেন। অধিকন্তু আমাদের দেখভাল করছেন। অথচ কিছুটা বুঝ হবার পর আমরা তাঁর প্রায় প্রতিটি কথার বিরুদ্ধাচারণ করছি। এই বিরোধিতা কি মৌনভাবে স্রষ্টার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা নয়?
: আরেকটু পরিষ্কার করে বলুন।
: আচ্ছা বলুন তো- ইবলিস জান্নাত থেকে বিতাড়িত হয়েছে কেন?
: আল্লাহর কথার অবাধ্যতার কারণে।
: হুম, রাইট। ইবলিস মূলত আল্লাহর কথার বিরোধিতা করে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সে বলেছে, ‘হে আল্লাহ! মানুষকে তোমার বিরোধী বানাব। আমি যে পথে চলছি তাদেরকেও সে পথে চালাব।’ এখন নিজেকে প্রশ্ন করে ভাবুন, আমরাও কি তাই করছি না? আল্লাহর কথার বিরোধিতা করে শয়তানের দল ভারি করছি না? শয়তানের পথ অনুসরণ করে আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি না?
: তাই তো!
: এ জন্যই বইয়ের নাম দিয়েছি ‘আল্লাহর সাথে যুদ্ধ’। যেখানে কাজে-কর্মে আল্লাহর নাফরমানি করে আল্লাহর বিরুদ্ধে সেই ভয়ংকর কাজটির কথা তুলে ধরা হয়েছে। এবার ক্লিয়ার?
: জি, ক্লিয়ার। তবুও কিছুটা অস্পষ্টতা থেকেই যায়।
: তা থাকবেই। পুরো বই না পড়লে সেটা বুঝে আসবে না। দেড়শ কলবরে লেখা বই এক পৃষ্ঠায় খোলাসা করা আমার মত অধমের পক্ষে সম্ভব নয়।
সূরা বাকার-২, আয়াত: ২৭৮